জুন মাসেই হচ্ছে আফগানিস্তান সিরিজ! নতুন “হোম গ্রাউন্ড” পেয়েছে আফগানিস্তান।
কথাটা আগেই বাতাসে ভাসছিলো, এবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের দেরাদুনের “রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম”-কে দ্বিতীয় “হোম গ্রাউন্ড” হিসেবে পেয়েছে আফগানিস্তান। উত্তরখন্ড রাজ্য সরকার স্টেডিয়ামটিকে লিজ দিয়েছে আফগানিস্তানের কাছে।
ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট এসোসিয়েশন দেরাদুনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ধিরাজ খারে বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন, “অফিশিয়ালি এখনো ঘোষনা দেয়া হয়নি, তবে হ্যা, আফগানিস্তান এখানেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবে”।
আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) শফিক স্তানিকজাই মিডিয়াতে বলেছেন, “দেরাদুন ভারতে আমাদের দ্বিতীয় হোমগ্রাউন্ড হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশের বিপক্ষে এখানেই খেলবো আমরা”।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ ঝুলে ছিলো মূলত ভেন্যু নিয়ে জটিলতায়। নতুন “হোম গ্রাউন্ড” পাওয়ার ফলে সেই জটিলতা দূর হয়েছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন জুনের প্রথম সপ্তাহে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দুই দল ভারতের দেরাদুনে।
এর আগে ভারতের গ্রেটার নইদার “শহীদ বিজয় সিং পথিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম” আফগানিস্তানের প্রথম হোমগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। আফগানিস্তান গ্রেটার নইদায় আয়ারল্যান্ডের সাথে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ছাড়াও আন্তঃমহাদেশীয় কাপ, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট ইত্যাদি খেলেছিলো।
কিন্তু টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার ফলে বিভিন্ন সিরিজ আয়োজনের জন্য অন্তত দুটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামের প্রয়োজন হয়। এই বিষয়ে ভারতের কাছে অনুরোধ জানালে বিসিসিআই লাকনাউ এর ইকানা স্টেডিয়াম এবং দেরাদুনের কথা জানায় আফগানিস্তানকে।
পাহাড়ে ঘেরা রুক্ষ পরিবেশের দেরাদুন আফগানিস্তানের কন্ডিশনের সাথে কিছুটা মিলে যাওয়ার ফলে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড দেরাদুনকেই বেছে নিয়েছে।
দেরাদুনের এই স্টেডিয়ামে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সকল সুযোগ সুবিধা। প্রায় ২৪০ কোটি রুপী খরচ করে উত্তরখান্ড প্রদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামটি নির্মান করে রাজ্য সরকার। যদিও বিসিসিআই ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোন ম্যাচ সেখানে দিয়েছিলো না কিন্তু রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ হয়েছে সেখানে।
স্টেডিয়ামটিতে ফ্লাডলাইট, জিম, সুইমিং পুল, বিলিয়ার্ড ক্লাব, অত্যাধুনিক ড্রেসিং রুম, ভিভিআইপি এনক্লোজার, গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড, ৭৫ মিটার বাউন্ডারি, ৫ টি উইকেট, ইনডোর অনুশীলন সুবিধা এবং ম্যাচ অফিশিয়ালদের আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করার সব ধরনের ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে।
অবশ্য দেরাদুন স্টেডিয়াম পেলেও গ্রেটার নইদাকে ছাড়ছে না আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেটাও থাকছে হোমগ্রাউন্ড হিসেবে। অর্থাৎ আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এখন দুটি লিজ নেয়া হোমগ্রাউন্ড।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে ভবিষ্যতে খেলবে কিনা আফগানিস্তান সেটা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান আতিফ মাশাল।
শারজাহ আফগানিস্তানের “হোমগ্রাউন্ড” না, বিভিন্ন সময় সিরিজ আয়োজনের জন্য ভাড়া করা হয়। কিন্তু শারজাহ সাম্প্রতিক সময়ে প্রচন্ড ব্যস্ত ভেন্যু হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছাড়াও, পিএসএল, আরব আমিরাত দলের ম্যাচ এবং বিভিন্ন সৌখিন টুর্নামেন্টের কারনে শারজাহ স্টেডিয়াম ফাঁকা পাওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছিলো আফগানিস্তানের জন্য। পাশাপাশি শারজাহতে সিরিজ আয়োজন প্রচন্ড ব্যয়বহুল।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বিসিবির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলো আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ফিরতি সফরের জন্য বিসিবিকে আমন্ত্রণ জানায় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, তবে ভেন্যু কোথায় হবে সেটা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা ছিলো।
প্রাথমিকভাবে ৩ ওয়ানডে আর ২ টি-টুয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলার আলোচনা হলেও এখন শুধু ওয়ানডে সিরিজ হবে। ১৪-১৮ জুন ভারত-আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচের আগেই বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ দিয়েই আন্তর্জাতিক অভিষেক হবে দেরাদুনের।
-হাসনাইন এমডি আকিফ